Story : Valobasar Joy
Writer : Tariqul Islam Shovon
"তোর জন্য আমি বণ্য, মাতাল অনুভব জুড়ে সব শুন্য..."
মৃদু শব্দে গানটা শুনছিল শোভন।হঠাৎ তার মোবাইলের রিংটোন বেজে উঠল। ডিসপ্লেতে সানিয়ার নাম ভেসে উঠেছে। শোভন রিসিভ করল।
_হ্যাঁ, ম্যডাম বলুন।
_কি করছ?
_এইত গান শুনছিলাম। তুমি?
_তোমার কথা ভাবছিলাম। হি হি
_হুম।
_এই বিকালে দেখা করতে পারবা?
_উমম.. দেখি।
_দেখি কেন!!
_ব্যস্ত থাকলে তো দেখা করতে পারব না।
_আমার সাথে দেখা করতে গেলেই সব ব্যস্ততা। হুহ হুহ
_আচ্ছা ঠিক আছে। দেখা করব।
_সত্যি! তুমি না..
_কি আমি?
_বলব না। হি হি
_ unsure emoticon
এরকমই চলতে থাকে ওদের খুনসুটি। একজনকে ছাড়া অন্য জন যেন এক মূহুর্ত থাকতে পারে না। এদিকে শোভন ওর মনের কথাটা বলতে গিয়েও সাহসে কুলায় না। তো একদিন শোভন ভাবল যে, আজকে সব বলবে সানিয়াকে। যা হবার হোক।
পার্কে বেঞ্চের ওপর দুজনে পাশাপাশি বসে আছে। শোভনই আগে কথা শুরু করল।
_সানিয়া একটা কথা বলার ছিল তোমাকে।
_হুম বল।
_I Love U, Sania.
মূহুর্তেই সানিয়ার হাসি মাখা মুখটা কালো মেঘে ঢাকা পড়ল। সানিয়া কিছু না বলেই উঠে চলে যায়। শোভনের ডাকে ফিরেও তাকায় না সে। শোভন হতবাক!
কথাটা বললে যে সানিয়া এইভাবে রাগ করে চলে যাবে, তা শোভন বুঝতে পারেনি। অনেক ফেরানোর চেষ্টা করেছে সানিয়াকে। কিন্তু সানিয়া শোভনের কোনো কথাই শুনলো না। হঠাৎ করেই বুকের ভেতর শুন্যতা অনুভব করল শোভন। কিছুই ভাবতে পারছে না। নিজেকে বড় একা মনে হচ্ছে।
এদিকে বাষায় ফিরে সানিয়া খুব কান্না করছে। তা দেখে ওর মা কান্নার কারণ জানতে চাইল। সানিয়া কিছুই বলল না। হঠাৎ করে শোভনের কল আসে সানিয়ার মোবাইলে। কিন্তু সানিয়া রিসিভ করে না। সানিয়ার মা কলটা রিসিভ করে।
_হ্যালো কে?
_আন্টি, আমি সানিয়ার বন্ধু। সানিয়াকে একটু দেবেন প্লীজ?
_বাবা, সানিয়াতো এখন কথা বলতে পারবে না।
_আন্টি, ওকে খুব দরকার।
_আচ্ছা বাবা তুমি তাহলে আমাদের বাষায় আসো।
_আচ্ছা আমি এক্ষুণি আসছি।
শোভন দ্রুত সানিয়াদের বাষায় চলে যায়। সানিয়া তখনো কাঁদছে। শোভন সবকথা খুলে বলে সানিয়ার আম্মুকে। চুপচাপ সব শোনে সানিয়ার আম্মু এবং শোভন লক্ষ্য করে যে তার চোখে পানি। শোভন কেমন যেন একটা রহস্যের মধ্যে পড়ল।
তারপর সানিয়ার আম্মু যা বলল। তা শুনে শোভন নির্বাক হয়ে গেল। আর সানিয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
আন্টির কথাগুলো বিশ্বাস হচ্ছে না। কি করে সম্ভব এটা?
সানিয়ারো ছিল খুব সুন্দর সাজানো একটা জীবন। আর ছিল পথচলার একজন সঙ্গী। সানিয়া ছেলেটাকে খুব ভালোবাসত। ছেলেটাও সানিয়াকে ভালোবাসত। সবসময় একজন আরেকজনের পাশে থাকত। কেউ কাউকে চোখের আড়াল হতে দিত না। একদিন সানিয়া অসুস্থ্য হয়ে পড়ল। ডাক্তার জানালো তেমন কিছু না। কিন্তু এভাবে প্রায়ই প্রচন্ড মাথা ব্যথায় অসুস্থ্য হয়ে পড়ত সানিয়া। ডাক্তার এক্স-রে করার পর জানায় সানিয়ার ব্রেণের পাশে একটা টিউমার আছে। যেটা অপারেশণ না করালে আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে অতিবাহিত হবে। অপারেশণ করাতে লাখ খানেক টাকা লাগবে। এত টাকা সানিয়ার পরিবার জোগাড় করতে পাড়বে না। যার সাথে সানিয়ার সারাজীবন থাকার কথা ছিল সেই আজ এই সমস্যার কথা জেনে সানিয়ার থেকে আস্তে আস্তে দূরে চলে যায়। ছেলেটার মুখ থেকেই সানিয়া তার অসুস্থ্যতার কথা প্রথম জানতে পারে। সানিয়া কথাটি মেনে নিতে পারেনি। সে ভেঙে পড়ে। তার পরিবার তাকে সবসময় হাসি-খুশী রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু সানিয়া তো জানে তার মৃত্যু বেশী দূর না। সেই থেকে সানিয়া তার অনিশ্চিত জীবনের সাথে কাউকে জড়াতে চায় না।............|